রাসূল ﷺ মার খেয়েছেন, বহিস্কৃত হয়েছেন, তায়েফে পাথর খেয়েছেন, মুখে চিন্তার ছাপ স্ফুটিত হয়েছিল, তাঁর ﷺ সম্মানিত স্ত্রীর ওপর অপবাদ দেওয়া হয়েছিল, লোকেরা তাকে জাদুকর বলেছিল, লোকেরা তাকে পাগল বলেছিল। পাহাড়ের ফেরেশতা নেমে আসল, ফেরেশতারা বললেন- তাদের ব্যাপারে আদেশ করুন (তথা শাস্তির নির্দেশ দিন)। (কিন্তু তিনি ﷺ বললেন) না। কেননা হয়তোবা তাদের বংশ থেকে আল্লাহ এমন কাউকে বের করবেন, যে কালিমা পাঠ করবেন ইসলামের পথে আসবেন। এটাই হলো রাসূল ﷺ এর দয়া। আমাদের জন্য নির্যাতিত হয়েছেন। আমাদের পূর্বে যত নবী ছিলেন তাদের একটা দোয়া ছিল যা করলে মহান আল্লাহ কবুল করে নিতেন। রাসূল ﷺ বললেন, তাঁরা কখন আল্লাহর নিকট এই দোয়া করতেন? যখন তাঁদের সম্প্রদায় তাঁদের বেশি কষ্ট দিত, তখন তাঁদের ব্যাপারে দোয়া (বদ দোয়া) করতেন। আমি ব্যতীত, আমি আমার এই দোয়াটাকে কিয়ামতের দিন আমার উম্মতের সুপারিশের জন্য রেখে দিয়েছি।
রাসূল ﷺ তায়েফের তিনজন নেতার কাছে গেলেন-
প্রথমজন বলল, আল্লাহ তোমায় ছাড়া আর কাউকে পেল না? যাকে কিনা আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন?
এরপর দ্বিতীয় জনের কাছে গেলেন-
সে বলল, আল্লাহর শপথ! হে মুহাম্মদ যদি তোমাকে আমরা কাবার গিলাফ ধরে ঝুলতেও দেখি তারপর তোমায় অনুসরণ করবো না।
আর তৃতীয়জন বলল, হে মুহাম্মদ যদি তুমি নবী হয়ে থাকো তাহলে তুমি তো আমাদের চেয়ে মর্যাদাবান আর যদি নবী না হও তাহলে তোমার মত ব্যক্তির অনুসরণ আমরা মোটেও করবো না।
যখন প্রত্যাখ্যান করলেন, অনেকেই আশা করেছিল তিনি হয়তো মক্কা ত্যাগ করবেন। কেননা মক্কায় আঠারোটি গোত্র। তাদের কেউই নবীকে মেনে নেয়নি। বের করে দিয়েছিল তাঁকে। তিনি ﷺ তাদের বললেন তোমরা আমায় ছেড়ে দিলেই আমি মক্কায় ফিরে যাব। তারা বলল, আল্লাহর শপথ আমরা তোমায় ছাড়বোনা। তারা মক্কায় কুরাইশদের নিকট একজন বার্তাবাহক পাঠালো। তারা বার্তাবাহক কে বলল, যাও এবং বল যে, মুহাম্মদ আমাদের কাছে থাকতে চাইছে। যেন আমরা তার সঙ্গ দেই। আর আমাদের ছেলেরা, দাসেরা, মূর্খরা বলছে তাকে রাস্তায় বের করে দাও। তারা তাকে ﷺ আঘাত করেছিল, পাথর মেরেছিল, অপমান করেছিল।
জায়েদ বিন হারিস (রাদিঃ) বলেন, আমি তাকে ﷺ বুকে নিলাম. আর হাত দিয়ে মাথা ঢাকলাম। আর তায়েফের মূর্খ লোকেরা পাথর মারছিল। এমনকি তাঁর ﷺ পা রক্তাক্ত হয়ে গিয়েছিল।
তিনি তার চৌদ্দশত বছর পরের উম্মতের জন্য এত কিছু করেছেন অথচ উম্মত তাঁর রাসূল রাসূল ﷺ এর সুন্নত কে ঐচ্ছিক বানিয়ে নিয়েছি, তাঁর জীবনাদর্শ পরিত্যাগ করেছি, তাঁকে ভালবাসে তথা নবী প্রেমিকের সাথে শত্রুতা করতেছি। তিনি সেই নবী যাঁর ঘাম আর রক্তের মাধ্যমে আমাদের নিকট ইসলাম পৌঁছেছে।