প্রাচীন চট্টগ্রামের বার আউলিয়া
চট্টগ্রাম বার আউলিয়ার দেশ নামে সুবিখ্যাত। সীতাকুন্ড থানায় 'বার আউলিয়া' নামক একটি গ্রাম আছে। সে গ্রামে 'বার আউলিয়ার দরগাহ' নামে খ্যাত একটি দরগাহ আছে। এই দরগাহর খোলা মাঠে সারিবদ্ধভাবে বারজন আউলিয়ার কবর চিহ্নিত করা হতো প্রাক-পাকিস্তান আমলে। কিন্তু তাঁদের কবরে সম সাময়িককালের নাম ও পরিচয়যুক্ত কোনো শিলালিপি ছিল না। তাঁদের নাম ও পরিচয় কেউ জানে না। কোনো ইতিহাসে এই বার আউলিয়া ও তাদের দরগাহ সম্বন্ধে, কোনো তথ্যও পাওয়া যায় না। পাকিস্তান আমলে এই বার আউলিয়া দরগাহের বারটি কবর আলাদাভাবে পাকা করে চিহ্নিত করা হয়েছে। এটাই কিংবদন্তির বার আউলিয়ার দরগাহ। অনেকেই মনে করেন এজন্যই চট্টগ্রাম বার আউলিয়ার দেশ নামে পরিচিত তবে ইতিহাসবিদরা এই কিংবদন্তিকে কারণ হিসেবে মানেন না। ফলে ইতিহাসভিত্তিক বার আউলিয়া সম্পর্কে আরো একাধিক মতবাদ প্রচলিত রয়েছে।
১. অনেক ইতিহাসবিদের মতে, বার আউলিয়া অর্থ বড় আউলিয়া, প্রসিদ্ধ আউলিয়া। চট্টগ্রামের বার আউলিয়া, প্রসিদ্ধ আউলিয়া বলতে সেক্ষেত্রে বায়েজিদ বোস্তামীকেই বুঝায়।
২. সোনারগাঁয়ের সুলতান ফখরউদ্দিন মুবারক শাহ (১৩৩৬- ১৩৪৯ খ্রি.) চট্টগ্রাম জয় করে প্রথম মুসলমান শাসনকর্তা হন। মরক্কোর ভূ-পর্যটক ইবনে বতুতার ভ্রমণকাহিনী সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। কথিত আছে যে, এ বিজয়ের কিছুকাল পূর্বে বার জন আউলিয়া একসঙ্গে চট্টগ্রামে ইসলাম প্রচার করার উদ্দেশ্যে এসেছিলেন।
তাঁরা সুলতানের অভিযানকালে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে চট্টগ্রাম বিজয়ে সহায়তা করেছিলেন। পরবর্তীতে তারাই চট্টগ্রামে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। ৩. বার আউলিয়া অর্থ বার জন আউলিয়া। ইতিহাসবিদদের মতে তাঁদের নির্দিষ্ট কোনো শতকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার প্রয়োজন নেই। চট্টগ্রামের বার আউলিয়া ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে আবির্ভূত হওয়া প্রসিদ্ধ বারজন আউলিয়া। এঁরা হলেন: বায়েজিদ বোস্তামী, বদর শাহ/পীর বদর আলম, কদল খান গাজী পীর, শেখ ফরিদাবাবা ফরিদ, শায়খ শরীফুদ্দিন, মোহসিন আউলিয়া, মোল্লা মিসকিন শাহ গরীব উল্লাহ, শাহ ওমর, সোন্দর ফকির শাহ, চাঁদ আউলিয়া এবং শাহ আমানত।
বায়েজিদ বোস্তামী (রহ)
হযরত বায়েজিদ বোস্তামীর দরগাহ চট্টগ্রাম শহরের নাসিরাবাদ এলাকার একটি পাহাড় শীর্ষে বিদ্যমান। বায়েজিদ বোস্তামী সুলতান-উল-আরেফিন নামে পরিচিত ইরানের বিখ্যাত সুফি। তিনি বোস্তাম শহরে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। প্রকৃত অর্থে, বায়েজিদ বোস্তামী নামে কোনো ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব বাংলায় এসেছিলেন বলে জানা যায় না। এটা বর্তমানে সর্বজন স্বীকৃত যে, শেখ বায়েজিদ বোস্তামী চট্টগ্রামে যাননি এবং চট্টগ্রামে তাঁর নামে পরিচিত সমাধিটি হচ্ছে একটি 'জওয়াব” বা অনুকৃতি। কিন্তু জনগণের একাংশ বিশ্বাস করেন যে, তিনি জীবদ্দশায় এ অঞ্চলে এসেছিলেন।
চট্টগ্রাম একটি সমুদ্রবন্দর এবং আরবরা তাদের বাণিজ্য জাহাজ নিয়ে অষ্টম শতাব্দীর দিকেও এ বন্দরে আসত। অতএব এটা অসম্ভব নয় যে, তাঁর মত একজন খ্যাতনামা সুফিসাধক নবম শতাব্দীতে এ অঞ্চলে এসেছিলেন। কিন্তু এটা অনুমানমাত্র। বায়েজিদ বোস্তামীর চট্টগ্রাম ভ্রমণের কোনো প্রামাণিক দলিল নেই। অষ্টাদশ শতাব্দীর কতিপয় বাঙালি কবি এবং চারণ কবি মৌলিক কাহিনীর ওপর নির্ভর করে তাদের কবিতায় নাসিরাবাদের সুফি শাহ সুলতানকে স্মরণ করেছেন। কোনো কোনো পন্ডিত বিশ্বাস করেন যে, কবিতার শাহ সুলতান হচ্ছে সুলতান-উল-আরেফিনের সংক্ষিপ্ত রূপ এবং সে কারণে শাহ সুলতান ও বায়েজিদ বোস্তামী অভিন্ন।
বদর শাহ: পীর বদর আলম (রহ)
বদর শাহ চট্টগ্রামে আগমনকারী বার আউলিয়াদের অন্যতম। তিনি এখানকার মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও দেশীয় খ্রিস্টান এই চার সম্প্রদায়ের শ্রদ্ধেয় আউলিয়া। পীর বদরকে নৌকা-সাম্পান যাত্রীদের ত্রাণকারী আউলিয়া বলে বিশ্বাস করা হয়। কথিত আছে যে, ১৩৪০ খ্রিস্টাব্দে সুলতান ফখরউদ্দিন মুবারক শাহর চট্টগ্রামে প্রথম মুসলমান বিজয়ের কিছুকাল আগে বদর শাহ এখানে ইসলাম প্রচারে নিযুক্ত ছিলেন। বদর শাহ ১৩৪০ খ্রিস্টাব্দের পর চট্টগ্রামে পরলোকগমন করেন। চট্টগ্রাম শহরের বকশিরহাট এলাকার বদরপাতি নামক স্থানের একটি স্বল্পোচ্চ টিলায় বদর শাহের দরগাহ আছে।
সপ্তদশ শতকের ঐতিহাসিক শিহাবউদ্দিন আহমদ তালিশ রচিত ফতিয়াই ইত্রিয়া নামক গ্রন্থ অনুযায়ী, দুর্গের একটি টিলার উপরে পীর বদরের আস্তানা নামে একটি কবর আছে। খাদেমেরা এখানে প্রার্থনা করেন। মগ শাসকরা কবরের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কয়েকটি গ্রাম ওয়াকফ করেন। তারা দরগাহে উপস্থিত হয়ে সম্মান প্রদর্শন করেন এবং দান খয়রাত করেন। বদর শাহের সমাধিভবন এখনো বর্তমান দরগাহটি এক গম্বুজবিশিষ্ট বর্গাকৃতির পাকা দালান। এটি সুলতানী আমলের গঠন শৈলীতে নির্মিত।
কদল খান গাজী পীর (রহ)
চট্টগ্রামে প্রচলিত জনশ্রুতি অনুযায়ী, চট্টগ্রামে প্রথম মুসলমান বিজয়কালে ( ১৩৪০ খ্রি.) কদল খান গাজী সুলতান ফখরউদ্দীনের সেনাপতি ছিলেন। চট্টগ্রামে ইসলাম প্রচারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। চট্টগ্রাম শহরের উত্তর দিকে কদল খান গাজীর মাজার আছে। স্থানীয় জনগণের কাছে তিনি 'কাতাল' বা 'কাত্তাল পীর' নামে পরিচিত। এ থেকে ঐ অঞ্চলের নাম হয় কাতালগঞ্জ। সম্ভবত কদল খান মগদের সাথে যুদ্ধে বহু শত্রুর শিরচ্ছেদ করে 'কতল' আখ্যা পান এবং কতল আঞ্চলিক উচ্চারণে হয়েছে 'কাতাল'।
শায়েখ শরীফুদ্দিন (রহ)
কবি মোহাম্মদ খান বিরচিত 'মুক্তল হোসেন' কাব্যে কবির আত্মকথায় মাতৃকুল পরিচিতি সূত্রে জানা যায় যে, শায়েখ শরীফুদ্দিন ছিলেন চট্টগ্রামে প্রথম ইসলাম প্রচারকারী বার আউলিয়াদের অন্যতম। তিনি ছিলেন কবি মোহাম্মদ খানের মাতৃ কুলের আদিপুরুষ।
শেখ ফরিদ: বাবা ফরিদ (রহ)
চট্টগ্রামের ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে শেখ ফরিদের চশমা নামে খ্যাত একটি ঝরনা আজও বিদ্যমান। কথিত আছে যে, সাধক শেখ ফরিদ সুদীর্ঘ ছত্রিশ বছর কাল এখানকার এক তেঁতুল গাছের তলায় সাধনায় লিপ্ত ছিলেন। তাঁর চোখের জলে সিক্ত হয়ে এখানে যে ঝরনার সৃষ্টি হয়েছিল তা শেখ ফরিদের চশমা নামে খ্যাত হয়। পরবর্তীকালে সাধারণ মুসলমানরা মানত করে রোগমুক্তির জন্য শেখ ফরিদের চশমার পানি পান করে থাকে।
সাধক শেখ ফরিদকে চট্টগ্রামবাসীরা পারস্যের সুফি সাধক শেখ ফরিদ উদ্দিন আত্তার (মৃত্যু ১২৩০ খ্রি.) বলে মনে করেন। আবার অনেকে পাঞ্জাবের পাক পত্তনে সমাহিত শেখ ফরিদ উদ্দিন শহরগঞ্জ বলে চিহ্নিত করতে চান। কিন্তু তা অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছু নয়। বর্ণিত দুই সাধক চট্টগ্রামে আসার কোনো প্রমাণ নেই। ডক্টর আব্দুল করিম চট্টগ্রামের সুফিসাধক শেষ ফরিদকে চট্টগ্রামের সন্তান বলে মনে করেন। সপ্তদশ শতকের কবি মোহাম্মদ খান তাঁর মাতৃকুল পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন যে, তাঁর মাতৃকুল পরিবার ছিল একটি সুফি পরিবার এবং তারা বার আউলিয়ার অন্যতম শেখ শরীফউদ্দিনের বংশধর।
মোহসেন আউলিয়া (রহ)
চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত আনোয়ারা থানার বটতলী গ্রামে মোহসেন আউলিয়ার দরগাহ অবস্থিত। ড. মুহম্মদ এনামুল হক তাকে পীর বদর শাহের সমসাময়িক কালের লোক বলে মনে করেন। মোহসেন আউলিয়ার দরগাহে একটি শিলালিপি আছে। ১৯৩৫ সালে ড. এনামুল হক তোগরা অক্ষরে উৎকীর্ণ উক্ত শিলালিপিতে তাঁর মৃত্যুকাল ৮০০ হিজরী বলে পাঠোদ্ধার করেছিলেন। ড. আব্দুল করিমের তথ্যানুযায়ী, মোহসেন জাউলিয়া ঝিয়রী এলাকায় আসার পর তাঁর অলৌকিক শক্তির দ্বারা এক বোবা ছেলে বাকশক্তি ফিরে পায়। তাতে মুগ্ধ হয়ে স্থানীয় হিন্দু বেড়া সম্প্রদায় তাকে একটি আস্তানা নির্মাণ করে দেয়। তিনি এখানে মারা যান ও সমাহিত হন।
মোল্লা মিসকিন শাহ (রহ)
মোল্লা মিসকিন শাহের দরগাহ চট্টগ্রাম শহরের কাজেম আলী হাই স্কুলের পশ্চিম পার্শ্বের পাহাড়ে অবস্থিত। তিনি চট্টগ্রামের মুসলমান সমাজে ছাত্রদের পরীক্ষা পাসে সহায়তা দানকারী সুফিসাধকরূপে খ্যাত। এখানকার মুসলমান ছাত্ররা পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের আশায় তাঁর দরগায় জিয়ারত ও শিরনি মানত করে থাকে। ১৯৮৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যবিষয়ক অধ্যাপক রিচার্ড ম্যাক্সওয়েল বাংলাদেশ সরকারের অনুমতিক্রমে চট্টগ্রাম জেলার রেকর্ড রুমে সংরক্ষতি মুসলমান আমলে প্রদত্ত রাজকীয় অনুদানের সনদ ও ফরমানসমূহ মাইক্রোফিল্মে সংগ্রহ করেন। তাতে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের প্রদত্ত এক ফরমানে মোল্লা মিসকিন শাহের পরিচয় পাওয়া যায়। ফরমানটি সম্রাট আওরঙ্গজেবের রাজত্বের ৩৫ বর্ষের ১১ই জিলকদ তারিখে জারি করা হয়। ফরমানটি শায়খ ছারদ মোগলী সিদ্দিকীর পুত্র সিপাদোহ-এর পুত্র হাজী মিসকিনকে চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত কুড়ি বিঘা জমি লাখেরাজ নিষ্কর দেয়া হয়েছিল। হাজী মোল্লা মিসকিন শাহ চিরকুমার ছিলেন। তবে রাউজান থানার কদলপুর গ্রামে তাঁর ভাই ও ভগ্নির বংশধর আছে।
গরীবউল্লাহ শাহ (রহ)
সাধক গরীবউল্লাহ শাহকে চট্টগ্রামের মুসলমানরা সাধারণত রোগ-ব্যাধির ও অর্থের ত্রাণকারী সাধকরূপে শ্রদ্ধা করে থাকে। সে উদ্দেশ্যে এখানকার মুসলমানরা তার দরগাহ জিয়ারত ও মানত করে শিরনি প্রদান করেন। শাহ গরীবউল্লাহর আদি নাম ছিল রুহউল্লাহ। তিনি প্রথমে সম্রাট শাজাহানের প্রথম পুত্র যুবরাজ দারা শিকোহ-এর সহচর ছিলেন। দারা শিকোহ সামুগড়ের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বন্দী হলে রুহউল্লাহ আওরঙ্গজেবের অধীনে চাকরি গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি পাটনায় এসে সাধক রুকনউদ্দীনের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। তখন থেকে তিনি গরীবউল্লাহ নাম ধারণ করেন। চট্টগ্রাম মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত হওয়ার পর সপ্তদশ শতকের শেষার্ধে তিনি চট্টগ্রামে আগমন করেন এবং এখানে পরলোকগমন করেন। দামপাড়ায় তাঁর দরগাহ অবস্থিত।
শাহ ওমর (রহ)
শাহ ওমরের দরগাহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের চকরিয়া থানার কাকারা গ্রামে অবস্থিত। তাঁর সম্পর্কে সঠিকভাবে বিস্তারিত কোন তথ্য পাওয়া যায় না। স্থানীয় জনসাধারণ তাঁকে চট্টগ্রামের বার আউলিয়ার অন্যতম মনে করেন।
শাহ চাঁদ আউলিয়া (রহ)
পটিয়া থানার নিকটবর্তী শ্রীমতি খালের উত্তর তীরে শাহ চাঁদ আউলিয়ার দরগাহ অবস্থিত। তাঁকে চট্টগ্রামের বার আউলিয়ার অন্যতম বলে মনে করা হয়। তিনি চিরকুমার ছিলেন। দিল্লিতে আত্মগোপন করে বাস করতেন। কোন এক রাজকুমারী তাঁকে স্বামীরূপে পেতে ইচ্ছা করলে তিনি চট্টগ্রামে পালিয়ে আসেন। কিছুদিন পর রাজকুমারীও চট্টগ্রামে আগমন করেন। তখন শাহ চাঁদ আউলিয়া রাজকুমারীকে বিয়ে করতে সম্মতি জ্ঞাপন করে হঠাৎ একদিন মৃত্যুমুখে পতিত হন। রাজকুমারী দিল্লিতে ফিরে না গিয়ে বাকি জীবন এখানেই কাটিয়ে দেন।
সোন্দর ফকির (রহ)
শাহ সোন্দর ফকিরের দরগাহ কোতয়ালী থানা ও সি.ডি.এ. ভবনের মধ্যবর্তী সড়ক দ্বীপে অব স্থত। তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায় নি। আব্দুল করিম সাহিত্যকি গারদ তাঁর রচিত একটি পদ আবিষ্কার করেন। এটি হচ্ছে:
রাগ মান সিচলরে মুমিন ভাই রূপ দেখি গিয়া। ধুএক হাতে বাজুবন্দ আর হাতে বাঁশিসোন্দর ফকির বলে হামো পরবাসী।
চট্টগ্রামের পীর আউলিয়ারা অধিকাংশই বহিরাগত ছিলেন। সম্ভবত সোন্দর ফকির চট্টগ্রামেরই সন্তান ছিলেন।
শাহ আমানত (রহ)
চট্টগ্রামের এই বিখ্যাত দরবেশ বিহার শরীফ থেকে এখানে আসেন বলে জনশ্রুতি আছে। ধারণা করা হয়, অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে তাঁর আবির্ভাব ঘটে। বর্তমানে শাহ আমানতের মাজার প্রাঙ্গণে যে পরিবারটি বসবাস করে এবং মাজার নিকট শাহ আমানতের পুত্র আনোয়ার খানের একটি ওয়াকফনামা আছে। হযরত শাহ আমানত অত্যন্ত অনাড়ম্বর জীবন-যাপন করতেন। তিনি যে আধ্যাত্মিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন তা কেউ জানতো না। কোন এক কেরামতের মাধ্যমে তার মাহাত্ম্য প্রকাশ হয়ে পড়ে এবং লোকে জানতে পারে যে, তিনি একজন উঁচু স্তরের দরবেশ। তিনি চট্টগ্রামের বিখ্যাত দরবেশরূপে গণ্য। চট্টগ্রামের লালদীঘির পূর্ব দিকে এক সমাধিসৌধে হযরত শাহ আমানত সমাহিত আছেন।
তথ্য: কীর্তিমান সোনার মানুষ (চট্টগ্রামের ইতিহাসে স্মরণীয় ও বরণীয় ব্যক্তিদের জীবন কর্মের বিশেষ সংকলন) - রচনা ও সম্পাদনায়: সোহেল মো. ফহরুদ-দীন (alert-success)