মহরে ফাতেমী বা ফাতেমা-এর মহরের হিসাব (Mahre Fatemi or Fatema's Mahar Calculation)

Join Telegram for More Books
মহরে ফাতেমী বা ফাতেমা-এর মহরের হিসাব (Mahre Fatemi or Fatema's Mahar Calculation)

মহরে ফাতেমী বা ফাতেমা-এর মহরের হিসাব

বিবাহের পর, স্বামীর কাজ হল তার স্ত্রীর যত্ন নেওয়া এবং তার ভাল-মন্দ সময়ে তার পাশে থাকা। তাদের উভয়েরই একে অপরের প্রতি কিছু অধিকার এবং দায়িত্ব রয়েছে। ইসলামে স্বামীর জন্য স্ত্রীকে বিয়ে করার সময় যৌতুক দেওয়া আবশ্যক। যাইহোক, এর অর্থ এই নয় যে যৌতুক একটি বিশাল পরিমাণ অর্থ হতে হবে। যৌতুক দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ কারণ তা গ্রহণ করা স্ত্রীর অধিকার।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আর মুমিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের আগে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারীদেরকে তোমাদের জন্য বৈধ করা হল, যদি তোমরা তাদের মোহর প্রদান কর বিয়ের জন্য, প্রকাশ্য ব্যভিচার বা গোপন প্রণয়িনী গ্রহণকারী হিসেবে নয়। -(সুরা মায়েদা. আয়াত, ৫)

'তোমরা কখনও নারীদের মাঝে ন্যায় সঙ্গত ও সমতাপূর্ণ আচরণ করতে পারবে না। অতএব,সাধ্যমতো চেষ্টা করো যাতে একবারে একদিকে ঝুঁকে না পড়ো, যাতে আরেকজনকে ফেলে রাখতে হয় দায়িত্বহীনের মতো। জেনে রেখো, যদি সংশোধনের পথ এবং খোদাভীরুতার পথ অবলম্বন করো, তবে আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, করুণাময়।' -সূরা নিসা, আয়াত-১২৯

উল্লেখিত আয়াতের মর্ম অনুধাবন করলে সহজেই বুঝা যায় যে, চারটি পর্যন্ত বিয়ে জায়েজ হলেও মুক্তির সহজ পথ হচ্ছে- একটিমাত্র বিয়েতে সন্তুষ্ট থাকার ভেতরে; কারণ, ফিতনা থেকে বেঁচে থাকতে এটা অধিকতর সহজ পথ। আসলে চার বিয়ে করে সকল বিবির প্রতি কোনোভাবেই ন্যয় বিচার ও সমতাপুর্ণ আচরন করা সম্ভব নয় বলেই তাতে রয়েছে অবধারিত শাস্তি। এরপরেও এক বিয়েতে ক্ষান্ত না হয়ে নানাবিধ ঠুনকো অযুহাত দেখিয়ে যারা চার বিয়ের পক্ষপাতি তাদেরকে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে বিষয়টি বুঝতে হবে। আল্লাহ তাআ'লা তার কালামের একাংশে থাকা এক বিয়ের যে কথা বলেছেন তাতেই রয়েছে অধিক মঙ্গল। অধিক কল্যান। সুতরাং, সাধারণভাবে থিতু থাকা উচিত তাতেই।

চার চারটি বা একাধিক বিয়ে করে স্ত্রীদের ভেতরে ইনসাফ ও সমতা রক্ষার শর্ত ভঙ্গ করলে আল্লাহ তাআ'লার পক্ষ হতে পরকালিন শাস্তি অপেক্ষা করছে- বিষয়টি শুধুই এমন নয়, বাস্তবিকতার আলোকে এর অনেক কুফল এ দুনিয়াতেই অনেককে পেতে দেখা যায়। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে কিছু পরিবারে এমন দৃশ্য খুবই স্বাভাবিক যেখানে সতীনে সতীনে ঝগড়াঝাটি থেকে শুরু করে নানাবিধ কলহ বিবাদ লেগেই থাকে। অবস্থা ভেদে অনেক ক্ষেত্রে এসব ঝগড়াঝাটি শুধু ঝগড়াঝাটিতেই থেমে থাকে না। মারামারি কিংবা খুনোখুনির ঘটনায় গিয়ে এর পরিসমাপ্তি ঘটে। আর এসবের ফলে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে নেমে আসে অশান্তির কালো ছায়া। তাই একাধিক বিয়ে জায়েজ বলেই যখন তখন একাধিক বিয়ের চিন্তা মাথায় আনা যাবে না। মনে রাখতে হবে, এই সুযোগটা রাখা হয়েছে বিশেষ প্রয়োজনের ক্ষেত্র বিবেচনা করে। অন্যান্য শর্ত পূরণের পাশাপাশি এর জন্য বিশেষ আর্থিক স্বচ্ছলতারও একটি ব্যাপার রয়েছে। যা লঙ্ঘন করলে তার জীবন দুর্বিসহ নিশ্চিত। দুনিয়া ও আখিরাত সবই তার ধ্বংসের মুখে পড়তে বাধ্য।

আর মোহরানা স্বামীর সামর্থ্যের ঊর্ধ্বে হতে পারবে না। স্ত্রীর বংশের ও তাঁর সমমানের মেয়েদের মোহরানার পরিমাণ বিবেচনা করাও উচিত। মোহরানার সর্বোচ্চ কোনো পরিমাণ ইসলাম নির্ধারণ করেনি। (বাদায়েউস সানায়ে : ২/২৭৫, মিরকাতুল মাফাতিহ : ৬/৩৫৮)

স্ত্রীর সম্মান ও স্বামীর সাধ্যানুযায়ী মোহরানা ধার্য করা সুন্নত। তবে মুসলিম সমাজে বিয়ের ক্ষেত্রে মোহরে ফাতেমিকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। অনেক নারী মোহরে ফাতেমি পাওয়ার আকাঙ্খাও করে থাকেন।

কারোও বিবাহ-শাদিতে মহরে ফাতেমী ধার্য করা যদিও শরীয়তের দৃষ্টিতে সুন্নত/ মুস্তাহাব কোনোটাই নয়, তথাপি অনেকেই বরকতের জন্য করে থাকেন, ফলে হিসাবটা জানা থাকা দরকার যেন কোনো বিড়ম্বনায় পরতে না হয়।

মহরে ফাতেমী = ৫০০ দিরহাম (রূপ্য মুদ্রা)
১ দিরহাম = ৩.০৬১৮ গ্রাম
মহরে ফাতেমী (৫০০×৩.০৬১৮) = ১৫৩০.৯ গ্রাম
১১.৬৬৪ গ্রাম = ১ ভরি
সুতরাং ১৫৩০.৯ গ্রাম (১৫৩০.৯-১১.৬৬৪) = ১৩১.২৫
ভরি রূপার দাম যদি ১০০০ টাকা ভরি হয়,
মহরে ফাতেমী হবে (১০০০×১৩১.২৫) = ১৩১২৫০ টাকা

অনেকের মতে ১৩১.২৫ ভরি এর স্থলে ভাংতিটা পূরণ করে সমান ১৫০ ভরি হবে। আবার রূপার দাম কম- বেশি হিসাবে মহরে ফাতেমী ভিন্ন হবে।

في بعض الروايات المعتبرة ان مهر فاطمة الزهراء (سلام الله عليها) كان درعاً حطمية تساوي ثلاثين درهما ولكن في الروايات الاخرى ان مهرها كان بمقدار مهر السنة (اي خمسمائة درهم) والدرهم يساوي ٢ ونصف غرام فضة-

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!